বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ফের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভিডিও–বৈঠক করছেন। এই বৈঠকে করোনা এবং লকডাউন পরিস্থিতির ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়ে আলোচনা হবে। সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে সম্ভবত যোগ দিচ্ছেন না পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবর্তে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা বা স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় থাকতে পারেন। উল্লেখ্য, মঙ্গলবার প্রথম দফার বৈঠক হয়। বুধবার দ্বিতীয় দফার বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানেই যোগ দেওয়ার কথা ছিল পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রীর।
কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভিডিও–বৈঠকে কেন থাকবেন না মমতা? এই প্রশ্নের উত্তরে সূত্রটি জানিয়েছে, ওই বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হবে না। কেবল দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকা অর্থহীন। কারণ, সারা দেশে করোনা সংক্রমণের তালিকায় ৭ নম্বরে রয়েছে বাংলা। সুতরাং বাংলার পরিস্থিতি যে খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়, তা পরিষ্কার। দেশের অবস্থাও এখন বেশ খারাপ। তাই করোনা মোকাবিলায় রাজ্য এবং দেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীরও অনেক কিছু বলার রয়েছে। কিন্তু, তাঁকে সেই বৈঠকে যদি বলার সুযোগই দেওয়া না হয়, তা হলে তিনি সেই বৈঠকে যোগ দেবেন কেন?
এদিকে, শাসক দলের তরফে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাকে বলার সুযোগ না দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার বঞ্চনা করছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী জানিয়েছেন, কেন্দ্র চিরকালই এ ভাবে বাংলাকে চুপ করিয়ে রাখতে চেয়েছে। এখনও তাই করছে। আসলে দিল্লি কলকাতাকে ভয় পাচ্ছে। তাই ওই বৈঠকে যোগ দেওয়ার কোনও মানে নেই। যদিও কলকাতার পুরপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বক্তার তালিকায় নাম নেই আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর। এ ভাবে কেন্দ্রের তরফে বাংলার কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা শুরু হয়েছে। আসলে সুপরামর্শ এবং গঠনমূলক সমালোচনা নিতে পারে না বিজেপি সরকার।’ তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার টুইটে লিখেছেন, ‘যদি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনতে এতই খারাপ লাগে, তা হলে ওই বৈঠকে তাঁকে ডাকা হল কেন?’
যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে বিষয়টির ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী যতবারই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সকলকেই বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। কারণ, ভারতের রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সংখ্যা ৩৬। একটি বৈঠকে সব রাজ্যকে বক্তব্য পেশ করতে দিলে, বৈঠকের সময়সীমা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে যাবে। তাই ১০টি রাজ্যকে বলার সুযোগ দেওয়া হয়। এ ভাবে বিভিন্ন বৈঠকে সব রাজ্যকেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আগের বৈঠকে পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিজের বক্তব্য জানিয়েছেন। তখন বিহার, ওডিশা এবং তেলেঙ্গানা বলার সুযোগ পায়নি। তখন তারাও বঞ্চনার অভিযোগ তুলেছিল। বঞ্চনার অভিযোগ সত্য নয়।